কাসুন্দি পরিচিত


কাসুন্দি আমাদের দেশের এক লোভনীয় খাবার। এর অপর নাম কাসন। এটি তৈরি করা হয় ঝাঁজাল রাই-সরিষা ব্যবহার করে। বিভিন্ন খাবারের সাথে পাতে নিয়ে এটি খাওয়া যায়। তবে টকজাতীয় কাঁচা ফলে মাখিয়ে খেতে এর তুলনা মেলা ভার। এভাবে অনেক খাবারের স্বাদ বহু গুণে বাড়িয়ে দেয় কাসুন্দি। আমাদের দেশে বৃহত্তর যশোর, ফরিদপুর ও খুলনা জেলায় বেশি কাসুন্দি ব্যবহার করা হয়। কাসুন্দি বানানোর আসল সময় বোশেখ মাস। এ সময় চৈতালী ফসলের সাথে রাই-সরিষা ওঠে। কাসুন্দি তৈরি করার অন্যতম উপকরণ কাঁচা আমও পাওয়া যায় বোশেখে। এ আম ফালি করে কেটে আঁটি ফেলে দিতে হয়। এরপর খোসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে এক খণ্ড কাপড়ে আমের পুঁটলি বাঁধতে হয়। এবার শিল-নোড়ায় আমের কুচিগুলো থেঁতলে রস চিপে ফেলতে হয়। এভাবেই কাপড়সহ আমের পেষা কুচিকে পরিমাণমতো লবণ ও হলুদ মাখিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত রোদে শুকাতে হয়। একই সময়ে মরিচ ও রাই-সরিষাকেও রোদে দিতে হয়। এবার বেশ শুকনো অবস্থায় সরিষা ও মরিচ গুঁড়ো করতে হয়। বেতের ধামা কিংবা পাথর বা মাটির একটি গভীর পাত্রে আমের শাঁস রেখে গুঁড়ো রাই-সরিষা ও মরিচ মাখিয়ে পরিমাণমতো গরম পানি মিশানো হয়। এরপর এগুলো ঠাণ্ডা হলেই হয়ে গেল কাসুন্দি। সাধারণত গ্রামের মেয়েরা কাসুন্দি বানায়। বর্তমানে কাসুন্দি কুটির শিল্পের মর্যাদা পেয়েছে। অনেক মানুষ কাসুন্দির ব্যবসায় করে রোজগার করছেন। কিছু বড় কোম্পানিও কাসুন্দি উৎপাদন করছে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান